Tuesday, April 30, 2024
HomeNewsআল হাইয়াতুল উলইয়া'র পরীক্ষা বর্জন হাটহাজারী মাদ্রাসার;বোর্ডের সিদ্ধান্ত আজ

আল হাইয়াতুল উলইয়া’র পরীক্ষা বর্জন হাটহাজারী মাদ্রাসার;বোর্ডের সিদ্ধান্ত আজ

আল হাইয়াতুল উলইয়া’র পরীক্ষা বর্জন হাটহাজারী মাদ্রাসার;বোর্ডের সিদ্ধান্ত আজঃ

মোদি বিরোধী আন্দোলনে হাটহাজারী মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্র শহীদ ও আহত এবং গ্রেফতার হওয়ার প্রতিবাদে এবং শহীদদের প্রতি সমবেদনা না জানানোর ইস্যুতে কওমী মাদ্রাসা সরকারি সনদের শিক্ষা বোর্ড আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কাওমিয়া বাংলাদেশ চূড়ান্তভাবে বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তর ঐতিহ্যবাহী কওমী মাদ্রাসা উম্মুল মাদারিস আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মইনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
২৮ মার্চ (রবিবার) সন্ধ্যায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আহুত হরতাল পালন শেষে হঠাৎ হাটহাজারী মাদ্রাসার মাঠে এ বোর্ড বর্জনের ডাক তুলেন শিক্ষার্থীরা। এতে মাদ্রাসার সকল শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।

শিক্ষার্থীদের দাবি শিক্ষকদের কাছে উপস্থাপন করা হলে মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দ মাদ্রাসা পরিচালনা বোর্ড ও শিক্ষা পরিচালনা বোর্ডের সমন্বিত সিদ্ধান্তে ২৯ মার্চ রাতে আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কাওমিয়া বাংলাদেশ বর্জনের চূড়ান্ত ঘোষণা দেওয়া হয়।

এর আগে ছাত্রদের দাবির মূখে পড়ে এবছর পরীক্ষা দিয়ে, আগামীকাল বছর থেকে পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। তা শিক্ষার্থীরা না মেনে তাদের আন্দোলন চালিযে যেতে থাকেন। ফলে বাধ্য হয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ গণস্বাক্ষরের মাধ্যমে নিজেদের দাবি পেশ করার নির্দেশ দেন। নির্দেশ অনুযায়ী ২৯ মার্চ সারাদিন দাওরায়ে হাদিসের প্রায় ১৭’শ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৪’শ ৫০ জন শিক্ষার্থী স্বাক্ষরের মাধ্যমে শিক্ষকদের কাছে হাইয়া বর্জনের দাবি জানালে সর্বসম্মতিক্রমে হাইয়া বর্জনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আন্দোলনকারী কয়েকজন শিক্ষার্থীদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা বলেন, মোদি বিরোধী আন্দোলনে আমাদের ১৭ জন ভাই শহীদ হয়েছেন, অনেক ভাই আহত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ছে। এবং অনেকেই গ্রেফতার হয়ে কারাগারে বন্দী। এসময় আমরা আমাদের শহীদী ভাইদের রক্তের সাথে বেঈমানী করতে পারি না। তাই আমরা আমাদের হাইয়া পরীক্ষা বর্জন করলাম।

boycottexam

হঠাৎ করে কেন এমন সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, সরকার কওমী মাদ্রাসা দাওরায়ে হাদিস কে মাস্টার্স র সমমান দিয়ে আমাদের বড় বড় মুরুব্বিদের কে তাদের হাতে রেখেছে। আন্দোলন সংগ্রামে যেন বড় বড় মুরুব্বিরা সরকারের কাছে বন্দী থাকে। সরকার শুধু নামমাত্র মাস্টার্স র সমমান দিয়ে কওমী মাদ্রাসাকে তাদের হাতে রাখার পায়তারা করে যাচ্ছে। আজ পর্যন্ত এ মাস্টার্স’র মান নিয়ে কোনো শিক্ষার্থীকে চাকরি দেওয়া হয়নি। তাছাড়া আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কাওমিয় বাংলাদেশ বোর্ড কর্তৃপক্ষ শহীদদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি তো দুরের কথা, তা নিয়ে কোনো কথায় বলেনি।

তাঁরা আরও বলেন, আল হাইয়াতুল উলইয়া কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নেওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা মূল কিতাব চর্চা থেকে দূরে সরে গিয়ে সার্টিফিকেটের আশায় নোট,গাইড,সাজেশন ইত্যাদি তে মনোযোগী হয়ে পড়েন। ফলে কওমী মাদ্রাসার যে একটা কিতাব চর্চার ঐতিহ্য তা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে এনে দারুল উলুম দেওয়াবন্দের হাজার বছরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে চাই। তাই এ পরীক্ষা ও বোর্ড উভয় বর্জন করলাম।

এছাড়া হাটহাজারী মাদ্রাসায় আরও সিদ্ধান্ত হয় যে, আগামী ৩১ মার্চ (বুধবার) থেকে হাটহাজারী মাদ্রাসার পক্ষ থেকে দাওরা হাদীসের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশর বৃহত্তম দীনি প্রতিষ্ঠান জামিয়া পটিয়াসহ আরো অন্যান্য মাদ্রাসায়ও হাইয়া বর্জনের দাবি জানানো হয়েছে। তবে সেসব মাদ্রাসার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও জানা যায়নি।

এদিকে কওমি মাদ্রাসাসমূহের শিক্ষাবোর্ড আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ ৩০ মার্চ (মঙ্গলবার) বোর্ডের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক আহ্বান করেছে। এতে পরীক্ষা বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে সূত্রে জানা যায়।

Related News
- Advertisment -

Popular News

error: Content is protected !!